আমার দাদা-রামদাস চক্রবর্তী 


ন' জন ভাই। ডাক নাম দুজনের । জ্যেষ্ঠ আর সর্বকনিষ্ঠ। বড় রা দাদাকে ডাকতেন " খোকা" আর দাদা সবথেকে ছোট ভাইয়ের নাম দিয়েছিলেন গদাই। মাঝের যাদের ডাক নাম মনে হত তারা মুল নামের ই রকম ফের। যেমন শিব দাস শিবু , দ্বিজদাস দ্বিজু বা বীর দাস বীরু। আমার ও দিদির তৈরি একটি নাম আছে। সতু। তবে চলন সীমিত।
দাদার কাঁধে চেপে গদাই এর বাজারে বা দাদার বন্ধু-বান্ধবের বাড়ী যাওয়া আমার মনে আছে। দাদা আমার থেকে ১৬ বছরের বড়। হয়ত সে সুযোগ আমার ও কোন কালে হয়েছে। দিদি বলতে পারবেন।
তবে দাদা যে , ১৯৫৫ সালের শুরুর দিকে আমাকে আর সোনাদাকে নিয়ে কালীঘাট ওরিয়েন্টাল স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। সেটা দিব্যি মনে আছে। সকাল-সকাল দিদি আমাদের মুখ হাত ধুইয়ে হাফ-শার্ট, তখন হাউই শার্ট নাম ছিল, পরিয়ে দিল । দাদা যাবার পথে আমাদের দু জনকে সদানন্দ রোডের ভ্যারাটি স্টোরস থেকে শুধু পেন্সিলে লেখা যায় এমন খাতা আর পেন্সিল কিনে নিয়ে হেডমাস্টার মশাই দেবেন বাবুর কাছে সরাসরি নিয়ে গেলেন। দেবেন বাবু সম্ভবতঃ পূর্ব-বঙ্গের পালং এ দাদার শিক্ষক ছিলেন। দেশ ভাগের পর এখানে। প্রাক্তন ছাত্রকে দেখে অনেক খবর নিলেন। আমরা চুপচাপ। জুল জুল করে চারিদিকে তাকাচ্ছি। হেড স্যর পরিমল 'দা কে ডেকে আমাদের ক্লাসে বসিয়ে দিতে বললেন। আমার ক্লাস টু আর সোনাদার ফোর। সেই আমাদের স্কুল জীবনের শুরু।
আমার দাদা ছিলেন মায়ের বন্ধু, ভরসা আর আমাদের আশ্রয় স্থল। দাদার ধারনা ছিল বড় ভাইয়েরা সংসারের আর ছোট ভাই আর বোনেদের জন্য নিজেদের দিকে নজর না করেই প্রাণপাত করবে। আর যতদিন সম্ভব দাদা তাই করেছেন। বাড়ীর বড় রা, ছোট রা বা আত্মীয় জনেরা এটাকেই স্বাভাবিক মনে করেছেন। আশ্রয়ের সাথে প্রশ্রয় ও দিয়েছেন। হাফ ইয়ারলি রেসালটের গার্জেন সই দাদাকে দিয়েই করাতাম আমরা। বাবা অব্দি গেলে প্রহারের সম্ভাবনা থাকতো। দাদা শুধু বলতেন , ফাইনালে কিন্তু পড়াশোনা করিস।
আমাদের পরিবারে আবদার বা বায়না করার চল ই ছিল না। আমাদের খুব যে একটা চাইদা ছিল তা ও নয়।কিন্তু কোন দরকার ই দাদার চোখ এড়ায় নি কোন দিন। সে দাদামনি- রাঙ্গাদার জন্য রাইটার পেন, ওয়াছেল মোল্লার দোকানের রেয়নের প্যান্ট বা মেজদা WBCS এ ফার্স্ট হবার পরে ঘড়ি আর স্যুট, দিদি র মুর্শিদাবাদ সিল্ক আর ছোড়দির জামা ।
আর আমার বায়োলজি বক্স? সে টি এত ই সুন্দর ছিল যে আমি প্রাণে ধরে ব্যবহার করে উঠতে পারিনি। বন্ধুদের টা দিয়েই কাজ চালাতাম। আমার যে একটু-আধটু ছবি আঁকার সখ ছিল সেটা দাদা কবে খেয়াল করেছিলেন কে জানে? আমার জন্য ড্রইং খাতা এল দাদার হাত ধরে। আমার প্রথম উইলসন পেন ও তাই।
আমার প্রথম দার্জিলিং যাওয়া ও তো দাদার ব্যবস্থাপনায়। দাদার বন্ধু কমল দা ( কমল ধর ) ছিলেন বি এন আর স্কাউটের স্কাউট মাস্টার। দাদার কথায় আমাকে দলে নিলেন দার্জিলিং ক্যাম্পের জন্য। যাবার আগে দাদা আমাকে একটা ডায়েরী দিলেন। বেড়ানোর বৃতান্ত লেখার জন্য আর দশ টাকা দিলেন হাত খরচ। দশ টাকা খরচ হয় নি । সেটা ফিরে এসে দাদাকে ফেরত দিয়েছিলাম। আর ডায়েরীর পাতায় কাঞ্চন জঙ্ঘা র স্কেচ ছিল কাঁচা হাতের। আর যাবার পথের নর্থ বেঙ্গল এক্সপ্রেসের সবকটা স্টেশনের নাম আর প্রতিদিনের ক্রিয়া-কলাপ লেখা ছিল।
এইট থেকে নাইনে ওঠার সময় অঙ্ক পরীক্ষা খারাপ হয়েছিল। বাবার খুব খারাপ লেগেছিল। আমার ও । দাদা একটা খুব মোটা বাধানো লেজারের খাতা এনে দিলেন। বললেন, এই খাতায় ক্লাস সিক্স থেকে শুরু করে অঙ্ক করা শুরু করবি। আমি জানি তুই ভালো করবি। আমি অন্যথা করি নি। আমার হায়ার সেকেন্ডারির অঙ্কে ২০০ র মধ্যে ১৯৩ কি আমার নিজের ই ? দাদার ও না কি?
দাদার বিয়েতেই আমার প্রথম বরযাত্রী যাওয়া। ক্লাস নাইন তখন। ১৯৬৩ সাল। বঙ্কিম বাবু র সেলাই নৈপুণ্যে যে ট্রাউসার হল সেটা আদতে বস্তা হলে ও রঙটা বাদামী। সেটাই প্রথম ট্রাউসার জীবনে। মা আর দাদা বললেন ভাল দেখাচ্ছে। দাদা বিয়ে করতে গেলেন শিল্পপতি প্রয়াত দেবেন ভট্টাচার্যের (আমাদের সম্পর্কে মামা আর সেকালের প্রখ্যাত শিল্পপতি) নতুন ক্যাডিল্যাক গাড়িতে। দুর্ভাগ্য, সে গাড়ী ঢাকুরিয়ার গলিতে ঢুকলো না। অতএব বাকী রাস্তাটা দাদাকে বড় রা সাইকেল রিক্সাতেই নিয়ে গেলেন।
আমার বি ই কলেজ হোস্টেলেও দাদা ই পৌঁছে দিয়েছিলেন। মোটেই ভাল লাগছিল না বাড়ী ছেড়ে যেতে। আমাকে ট্যাক্সিতে সারা রাস্তা দাদা আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর ডাউনিং হোস্টেলের ২০৩ নম্বর ঘরে আমার সহ আবাসিকদের আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৬৫ সাল থেকেই বাবার হার্টের অসুখের বাড়াবাড়ি। আমার হায়ার সেকেন্ডারির পরে পরে ই ।আমার স্কলারশিপের টাকা সবটাই বাবার হাতে দিতাম। বাবা মাসে মাসে আমাকে টাকা দিতেন। তারপর স্কলারশিপ বাড়ল না, কিন্তু খরচ তো বেড়ে গেলো। কিছু বাড়তি তো দরকার। তখন দাদা ই ভরসা। এখনো জানি না দাদা কি ভাবে টাকার সংস্থান করতেন। আমরা কেমন অভ্যাসেই দাদাকে চিরকাল আলাদীনের প্রদীপ ভেবেছি।
পরে যখন যখন চাকরী পাল্টেছি, দাদার সঙ্গে পরামর্শ করেছি। চিরকাল দাদা ভরসা দিয়েছেন। দাদা মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরীর ব্যাপারে বিশেষ না জানলে যথাসাধ্য আশ্বাস দিতেন আর সেটাই আমার পাথেয় ছিল। আমার প্রতি টি লাইফ পলিসি আর ট্যাক্স সেভিংস দাদার উদ্যোগেই হয়েছিল। সেগুলি বেশীর ভাগ ই আমাদের কো-অপারেটিভ করে বাড়ি করার সময় ম্যাচিয়র করে।
বাবা নিজে খুব ভাল ছাত্র ছিলেন। তাই দাদার থেকে খুব ভাল রেজাল্ট আশা করতেন। তাঁর নজর এড়িয়ে গেছিল যে দাদা বই নিয়ে বসে থাকলে সংসার চলে না যে। দাদা ও যে খুব বই-বিলাসী ছিলেন তাও বোধ হয় না।
দাদার ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা শ্যামবাজার এ ভি স্কুল থেকে। তখন বাড়ীর সবাই বোধ হয় পালং এ। দাদা পড়া শোনার জন্য কালীঘাটে মনি কাকার বাড়ীতে। সেখান থেকে স্কুল যাতায়াত করে পরীক্ষা দেওয়া খুব সহজ ছিল না। তার পরে দাদা পাস করার পর রাতের কলেজে ইন্টারমিডিয়েট কমার্সে ভর্তি হলেন। দুপুরে কাজ করে রোজগারে র বাসনা। মধ্যবিত্ত পরিবারে কমার্সের সেকালে কদর ছিল না। কমার্স মানেই একটু কম কিছু।
তারপর দেশভাগ, পরিবারের প্রথমে বসিরহাট তারপর কলকাতায় স্থিত হওয়া। দাদার ছাত্র জীবন বিঘ্নিত হল। সবার অজান্তে দাদা কিন্তু তার পড়া শোনা চালিয়েছি লেন। দিদির বিয়ের দিন ১৯৫৬ সালের মে মাসে বি কমের রেসাল্ট জানা গেল। দাদার হাই সেকেন্ড ক্লাস। সেটা কিন্তু ১৯৫৬ সালে খুব ই দুর্লভ একটা স্বীকৃতি। তখন দাদা বেঙ্গল লাইম স্টোনের সঙ্গে যুক্ত।
দাদা নিজের জন্য কোনদিন ধরাবাঁধা চাকরী পছন্দ করেন নি। একসময় ওষুধের পাইকারি ব্যবসা করেছেন। আমাদের ছোটবেলায় বহরমপুর -মুশিদাবাদে যেতেন হাতীর দাঁতের শিল্প কর্ম আনতে। কৃষ্ণনগর যেতেন মাটির পুতুল আনতে। সেগুলি কোন সংস্থার মাধ্যমে রপ্তানি হত বিদেশে। তারপর সম্ভবতঃ বড় সংস্থারা এ কাজে এলো। দাদার তো পুঁজি ছিল না। তাই সে ব্যবসা চলে নি। ট্যাকস প্রাকটিস করেছেন। ভাল ক্লায়েন্ট ছিল দাদার। কিন্তু এ কাজে ও ধীরে ধীরে এল প্রতিযোগীরা । তারা প্রফেশানালি কোয়ালিফাইড। তাদের সংখ্যা বেড়ে গেল। দাদার বয়স ও।
দাদা যে অ্যাকাউনটেন্সী মানে হিসাব শাস্ত্র খুব ভাল জানতেন তা আমি খুব ভাল জানি। আমার কস্ট-অ্যাকাউনটেন্সী ফাইনাল পরীক্ষার আগে কোম্পানির মার্জার দাদার কাছ থেকে বুঝে নিয়েছি। এটা দাদাদের সময় বি কমের পাঠ্য ছিল না। কিন্তু দাদা ভাল ই জানতেন। তা স্বত্বেও নিজের হিসেব নিয়ে দাদা কোন দিন মাথা ঘামান নি।
একেবারে মহামায়া লেনের প্রান্তে এক দোতালা বাড়ীর একতলা ঘরে ছিল দাদাদের ক্লাব। নাম যতদূর মনে পড়ে পলিটিকস কর্নার। না। মোটেই পার্টি অফিস না। সেখানে একদল বন্ধু মিলে তাস পেটাতেন। আর একটা লাইব্রেরী ছিল। সেখান থেকে দাদা বই নিয়ে আসতেন দিদির পড়ার জন্য।
দাদা অবশ্য কংগ্রেসি ছিলেন। দাদার মুখে মাঝে মাঝেই বদু দার নাম শুনতাম। তিনি সম্ভবত নির্মলেন্দু দে। নেতা ছিলেন। আর শুনতাম আভা দির কথা। আভা মাইতি পরে মন্ত্রী ও হয়েছিলেন। আজকের দিনে হলে দাদার কিছু না হলে ও বাসের পারমিট বা রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা হতে পারতো। তবে সেই পঞ্চাশের দশকে নেতা- কর্মী আর দেশের সাথে দেওয়া নেয়ার বিষয় টা অত পাকাপোক্ত হয় নি। তাই প্রফুল্ল ঘোষ, প্রফুল্ল সেন বা অতুল্য ঘোষ , অজয় মুখারজী রা কিছু রেখে jযান নি, যাতে আমরা তাদের মনে রাখতে পারি। আর কর্মী রাও কংগ্রেস করি বা আমরা কম্যুনিস্ট -এটা বলেই খুশী হতেন।
আমাদের মামার বাড়ি ছিল কালী লেনে। সুধীর মামা, বরকা মামারা মায়ের পিসতুতো ভাই। তারা ছিলেন কম্যুনিস্ট। বরকা মামা ছিলেন দাদার সমবয়সী, বন্ধু স্থানীয়। কম্যুনিস্ট বলে পুলিশের নজরে ছিলেন। তাদের বিপরীত মুখী রাজনীতির জন্য কোনদিন কোন বিতর্ক দেখি নি। বন্ধুত্বেও কোন ভাঁটা পড়েনি।
শুধু তাই বা কেন? কালীঘাট মারপিটের জায়গা হওয়া সত্বেও কোন রাজনৈতিক মারামারি হত না। যা হত তা কালী বাড়ির পালা নিয়ে।
দাদা পড়তেন খাদির ধুতি- পাঞ্জাবী বা ধুতি-শার্ট । আমি যখন ক্লাস সিক্সে, তখন দাদাকে বাড়ীর সবাই জোর করে প্যান্ট- শার্ট পড়ানোর চেষ্টা করে। কয়েক মিনিটের জন্য। দাদা নিজেকে বাড়ীর বড় আলমারি র আয়না তে দেখে বিলিতি পোশাক বর্জন করেন। দাদার পরনের যে উলের পোশাক সেটা ও খদি ভবনের ই ।
দাদার বন্ধু বান্ধব ছিল অনেক। তাদের মধ্যে খুব সম্পন্ন রা, বা বিশেষ শিক্ষিত রাও ছিলেন আবার খুব ই নিম্নবিত্ত রা ও ছিলেন। বিভিন্ন জীবিকার মানুষ জন ছিলেন। সূর্য দা ছিলেন পেশায় স্বর্ণকার। দাদার ছোটবেলার সহপাঠী। আমাদের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল। আবার কালীঘাট বাজারের সবজী বিক্রেতা জ্ঞানা দা। তিনি ছিলেন দাদার ছোট বেলার খেলার সাথী। বাজারে গিয়ে দাদা প্রথমেই জ্ঞানা দা র কাছে হাজিরা দিতেন।
দাদার বাজার ও ছিল আজব। দাদা প্রত্যেক টি রান্নার উপাদান জানতেন। পুঁই শাক কিনলে যে কুমড়ো নিতে হবে বা ইলিশ কিনলে যে কচুর শাক কেনা জরুরী সেটা দাদা কে বলে দিতে হত না। তাই মা সব সময়ই পছন্দ করতেন দাদার বাজার করা।
দাদা Bengal Lime Stone এ কাজ করা কালীন রাঁচী হয়ে লোহার দাগা যেতেন। ফেরার সময় রাঁচী থেকে ফুলকপি নিয়ে আসতেন ঝুড়ি ভর্তি । তা কাকামনি আর জ্যেঠামশাই এর বাড়ি তেও যেত। এছাড়া যখন হাতির দাঁতের জিনিসের কিনে এনে রপ্তানী করতেন তখন যেতেন বহরমপুরে। তখন ট্রাঙ্ক্ক ভর্তি আম আসত দাদার সাথে। চেহারা ছোট-খাটো ছিল অন্য ভাইদের তুলনায়। তবে মনটা ছিল অনেক অনেক বড়।

শেষ বয়সে দাদা অনেক দিন ই ঘর বন্দী ছিলেন। দেখা করতে যেতাম। অনেক কথা হতে পারত না। তবে হাসি টি কিন্তু আগাগোড়াই এক ই রকম দেখেছি।বিভূতিভূষণ পথের পাঁচালীতে ইন্দির ঠাকুরের মৃত্যু প্রসঙ্গে লিখেছিলেন , ইন্দির ঠাকুরের মৃত্যু র সঙ্গে সঙ্গে নিশিন্দি পুরের সেকাল শেষ হইয়া গেল। 
দাদা র চলে যাওয়া য় আমাদের পরিবারের তেমনটাই হল না কি ? ?

Comments

Unknown said…
এত ভাল লেখা যে ,শুধু মুগ্ধ ,শুধু গর্বিত আর কিছু বলার নেই।

দাদাকে প্রনাম।
shyamal das said…
সত্য, তোর এই লেখার অনেক দিন পর আমার নজরে এল। আমি ঠিক মনে করতে পারছি না,তবে দাদাকে দেখেছি নিশ্চয়ই। দ্বিজ দা,গুরুদা কিংবা WBCS এ প্রথম হওয়া দাদা (সম্ভবত, একটা সময় Motor Vehicle department র পদস্থ আধিকারিক ছিলেন)র কথা মনে আছে। গদাই কে তো চিনতাম ই।
তোর লেখার মধ্য দিয়ে এই দাদাকে চিনলাম।স্মূতিমেদুর এই লেখা এই অনন্য স্মৃতিচারণ। প্রয়াত দাদার প্রতি আর এক ভাইয়ের সশ্রদ্ধ প্রণাম।

Popular posts from this blog

Raibahadur

Ex-Meconian's PICNIC at PAT'S COTTAGE at Sonarpur, on 3rd January 2016

People's Mandate